উদ্যােক্তা হতে যে বিষয় গুলো সব সময় মনে রাখতে হবে।nbcbangla.com
ব্যর্থতা এমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয় যা কিনা আপনাকে উদ্যোক্তা হওয়ার পূর্বে বিবেচনা করতে হবে। পূর্ববর্তী গবেষণা থেকে দেখা গিয়েছে যে, উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানকে সফল প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন করে। সকল উদ্যোগতা বা ব্যবসায়ী সফল হওয়ার কিছু নিয়ম অনুসরণ করেন। উদ্যোক্তাদের ব্যর্থ হওয়ার কিছু কারণ আজকে আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ!
১. দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায়িক পরিকল্পনার অভাব-
আমরা তেমন কোনো কিছু না ভেবেচিন্তেই একটা উদ্যোগ বা ব্যবসা শুরু করে দেই। উদ্যোগ বা ব্যবসা শুরুর সূচনা পয়েন্টে আপনাকে জানতে হবে আপনি ২, ৫,১০ বছর পর আপনার ব্যবসাকে কোথায় দেখতে চান। একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আপনাকে ছোট ছোট কাজে ফোকাস করতে সহযোগিতা করবে এবং আপনাকে কোন ভুল দিকে পরিচালিত হওয়া থেকে বিরত রাখবে।
২. সঠিক ব্যবসা নির্বাচন-
একজন উদ্যোক্তা এমন একটি জটিল মুহূর্তের সম্মুখীন হন যখন তাকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়, কোন উদ্যোগ বা ব্যবসা শুরু করব। প্রতিটি ব্যবসায়ের রয়েছে অপার সম্ভাবনা কিন্তু প্রতিটি ব্যবসা আপনার জন্য উপযুক্ত নয়। উদ্যোগ কখনো নিজের সাধ্যের বাইরে গ্রহণ করা যাবে না।ব্যবসা নির্বাচন করার আগে যথাযথ গবেষণা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
৩. যথাযথ পরিকল্পনার অভাব-
ব্যবসায়িক পরিকল্পনা একটি নতুন উদ্যোগ বা ব্যবসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ উদ্যোক্তাই অবহেলাজনিত কারণে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি করেন না। পরিকল্পনার মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী কৌশল অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।আপনার ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ্য নির্ধারণে সহায়তা করবে।
৪. পর্যাপ্ত মূলধনের অভাব-
পর্যাপ্ত মূলধন ব্যতীত ব্যবসা শুরু করা আত্মহত্যার শামিল। প্রতিনিয়তই দেখা যায় নতুন উদ্যোক্তাগণ
ব্যবসা সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তাকে অবমূল্যায়ন করেন। যার কারণে পরবর্তীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে তারা বাধ্য হয়।
৫. পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়নের অভাব-
একটি সুন্দর পরিকল্পনাও যথাযথ সম্পাদন ছাড়া মূল্যহীন।অদক্ষ নেতৃত্বের কারণে সুন্দর পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না।
৬. ব্যবসা পরিচালনায় ভুল লোক নিয়োগ দেয়া-
কোন ভুল লোক নিয়োগ দেয়া কেবলমাত্র সম্পদের অপচয় নয়, এটি একটি নেতিবাচক কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করে। ভুল লোক নিয়োগ দিয়ে অনুশোচনা করার পরিবর্তে, দ্রুত সঠিক লোক সঠিক জায়গায় প্রতিস্থাপন করা একটি বুদ্ধিমানের কাজ।
৭. যথাযথ বিজ্ঞাপনের অভাব-
একটি উদ্যোগ বা ব্যবসার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভের মধ্যে একটি হলো বিপণন ব্যবস্থা। শুধুমাত্র যথাযথ মার্কেটিংয়ের অভাবে অনেক উদ্যোগ খুব দ্রুতই ঝরে পড়েছে।
৮. খুব তাড়াতাড়ি ব্যবসা প্রসার করা-
ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করা প্রত্যেক উদ্যোগতারই একটি প্রাথমিক লক্ষ্য। খুব দ্রুত ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করে পরে ব্যয় ভার বহন না করতে পারলে খুব দ্রুতই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে।
উদ্যোগ বা ব্যবসার প্রসারণের পর পরিচালনা করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। উদ্যোগ বা ব্যবসা প্রসারণের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ৫ টাকা দামের কলম থেকে একটি আস্ত জাহাজ সবই বিক্রি হয় অ্যামাজন এ। অ্যামাজন কিন্তু প্রথম কয়েক বছর শুধুমাত্র বই এবং সিডি বিক্রি করেছে।পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ক্যাটাগরির পণ্য এবং বিভিন্ন দেশে তাদের সার্ভিস বৃদ্ধি করেছে।
৯. ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার অবমূল্যায়ন-
বিভিন্ন উদ্যোক্তাগণ কেন গতানুগতিক ব্যবসায়িক ধারণা থেকে ভিন্নধর্মী ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী? এর মূল কারণ হলো ব্যাবসায়িক প্রতিযোগিতা এড়িয়ে চলা। আপনার প্রতিযোগীদের অবশ্যই বুঝতে হবে, প্রতিযোগীর শক্তি এবং দুর্বলতার প্রতি গভীর দৃষ্টি রাখতে হবে।তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ হুমকি হিসেবে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে।
১০. খুব তাড়াতাড়ি উদ্যোগ বা ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া-
প্রচন্ড হতাশার মধ্যে কাউকে উৎসাহিত করা সত্যিই খুব কঠিন। এমন কোন ম্যাজিক নেই যার মাধ্যমে আপনার ব্যর্থ প্রতিষ্ঠান সফল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা যায়।হাল ছেড়ে দেয়ার পরিবর্তে, আপনার ভুলগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন এবং সেগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
কমেন্টে আপনার সুচিন্তিত মতামত উল্লেখ করুন।
আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তীতে উদ্যোক্তা বিষয়ক আরো বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবো।
0 Comments