ইন্টারনেট কি?ইন্টারনেট কিভাবে তৈরি হয় এবং ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে জেনেনিন - nbcbangla.com
কয়েকদিন আগে বালু তুলতে গিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের ক্ষতি হওয়াই ইন্টারনেট গতি ধীর হয়।কিন্তু সামান্য একটা পাইপের ক্ষতির কারনে ইন্টারনেট ধীর গতি হলো কেন? এই বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছি।
সাবমেরিন ক্যাবল বলতে সোজা বাংলায় বলা যায় পানির নিচের পাইপ। যে পাইপের মধ্য দিয়ে অপটিক্যাল তার থাকে। যেটার সাহায্যে আমরা ইন্টারনেটে ব্যবহার করি।
আমরা যে ভিডিও, ছবি, তথ্য ইত্যাদি সার্চ করি সেগুলো আবার ফোনের মধ্যে ডাউনলোড ও করতে পারি। মোট কথা এইসব ভিডিও, ছবি, বিভিন্ন রকম তথ্য আপনা আপনি আসে না। এগুলো কোথাও না কেথাও সংরক্ষিত থাকে। এসব ফাইল যেখানে সংরক্ষিত থাকে সেটা হলো ডেটাসেন্টার।
তাহলে বাতাসের মাধ্যমে কি এসব ফাইল আমাদের মধ্যে আসে?
উত্তর হ্যাঁ না দুটোই হতে পারে।
কেমনে?
আমরা যেসব ফাইল খুজি সেগুলো কোথাও না কোথাও সার্চ দিই।সেই বাংলা বা ইংলিশ লেখাগুলো বাতাসে ভেসে ভেসে ডেটাসেন্টারে গিয়ে আমাদের রিকোয়েস্টের তথ্য আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
যেমন আমরা সার্চ দিলাম "কিভাবে না পড়েও পরীক্ষায় ভালো করা যায়?"
ডাটাসেন্টরে আগে থেকে এই নামে ফাইল থাকা লাগবে। এটাকে নাম না বলে নিকনেইম বলা যায়। কারন ডিভাইস আমাদের ভাষা বোঝে না। তারা বোঝে বাইনারি অর্থাৎ 1 ও 0। আমরা যখন সার্চ দেই "কিভাবে না পড়েও পরীক্ষায় ভালো করা যায়?যদি এই নামের কেউ থাকে তাহলে তাকে এখনি যাওয়া লাগবে। তখন আমাদের সার্চ করা রিকোয়েস্টে ডেটাসেন্টার এই নামের ফাইল বাতাসে/স্যাটেলাইটের সাহায্যে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এইভাবে একইসাথে আরো অনেক রিকোয়েস্ট আসে তাদেরকে বাতাসে পাঠিয়ে দিলে একসাথে অনেকগুলো তথ্য যাওয়ার ফলে বাতাসে তথ্যের এক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই এক্সিডেন্ট যাতে না হয় সেজন্যে বিশেষজ্ঞরা একটা নতুন উপায় বানালেন সেটা হলো তথ্য গুলোকে আলোক তারের সাহায্য রিকোয়েসটকারীর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। কারন আলোর বেগ আপাতত সবথেকে বেশি। এই পাইপের মাধ্যমে ডেটা স্থানান্তরের জন্য দরকার বিশ্বের সব জায়গায় আলোক তারের কানেক্টিভিটি। এই আলোক তারগুলো পাইপের ভিতর দিয়ে পাঠিয়ে বিশ্বব্যাপী তৈরি করা হয় একটা নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি। এইজন্যে ইন্টারনেটকে বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ও বলা হয়।
পাইপগুলো ডেটা সেন্টারের থেকে বড় বড় পাহাড়-পর্বতের উপর , নদী, সাগরের নিচ দিয়ে কানেকশন দেওয়া হয়।
আর নদী সাগরের উপর দিয়ে তো সেই পাইপগুলোর সংযোগ দিলে ডিশের মতো তাহলে অল্প ঝড় বৃষ্টিতেই কানেকশন বন্ধ হয়ে যেতো। তাই নাদী সাগরের, মহাসাগরের তলায় সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ দিয়ে পাইপ কানেক্টিভিটি যুক্ত করা। তো এই পাইপের সাহায্য নিয়ে ব্রডব্যান্ড ব্যবসায়ীরা ডাইরেক্ট ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির ব্যবস্থা করে। তারা বিভিন্ন জায়গায় কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে ইন্টারনেট স্পিড কম বেশি করে। আর এই ব্রড ব্যান্ডের লাইন নিয়ে আমরা ওয়াইফাই রাউটারের সাহায্যে ইন্টারনেটের কানেক্টিভিটি পাই। ওয়াইফাই রাউটার থেকে একাধারে যে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যাল বের হয় আর আমরা সেই সিগন্যাল গ্রহণ করি ডিভাইসের অ্যান্টেনার সাহায্যে। এই জন্য ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের কিছু রেন্জ আছে। আমরা যতদুর পর্যন্ত এই সিগন্যালকে একসেস করতে পারব ততদুর পর্যন্ত আমাদের ডিভাইসের ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি থাকবে। এছাড়া ওয়াইফাই রাউটার থেকে আমরা ক্যাবলের মাধ্যমে ডাইরেক্ট আমাদের ডিভাইসে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি দিতে পারি।
এটা তো গেল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের কথা।
কিন্তু আমরা যারা ব্রডব্যান্ড ইউজ না করি তারাও তে ইন্টারনেটে কাজ করি কিন্তু কিভাবে?
ওই যে পাইপগুলো বড় বড় পাহাড়ের উপর, নদী, সমুদ্র ইত্যাদির নিচ দিয়ে আসা অপটিক্যাল ফাইবারের তার সেই পাইপগুলোর সাহয্যে সিম কোম্পানি গুলো তাদের টাওয়ারে কানেক্টিভিটি দেয়। আর সেই টাওয়ারের উপরের দিকে লাল বাতি লক্ষ্য করা যায় যেখানে অ্যান্টেনা থাকে। ওই অ্যান্টেনা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সিগন্যাল ছাড়ে আর আমাদের হাতে থাকা ডিভাইসের অ্যান্টেনাগুলো সেই সিগন্যাল গ্রহণ করে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি সুবিধা পায়।
এইখানে অপারেটর কোম্পানি গুলোর খরচ হয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। তাদের একটা বড় ধরনের অ্যামাউন্ট খরচ হয়। আর এ পৃথিবীতে কেউ কারো জন্যে একটা টাকা খরচ করে না সেখানে বিজনেসে থাকা সীম কোম্পানি গুলো কীভাবে আমার আপনার জন্যে এতগুলো টাকা খরচ করবে।
না তারা আমাদের জন্য এমনি এমনি খরচ করবে না বিনিময়ে আামাদের কাছ থেকে টাকা নিবে। আমরা যখন কোটি কোটি গ্রাহক বিভিন্ন তথ্য খোজার জন্যে তাদের কাছ থেকে তথ্যের একক মেগাবাইট ক্রয় করি তখন কিন্তু ঠিকই বাছাধনেরা আমাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
এটাই বিজনেস।
তাই কয়েকদিন আগে একটি সাবমেরিন ক্যাবলে বালি তুলতে গিয়ে আঘাত লাগলে সারা বাংলাদেশের ইন্টারনেটের গতি ধীর হয়।
nbcbangla.com
0 Comments